হাঁপানি:
হাঁপানি নির্দিষ্ট বয়সে কোনো রোগ নয়। যেকোনো বয়সে যেকোনো মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। হাঁপানিহলো এলার্জির বহিঃ প্রকাশ।
কারণ :
রক্তে ইউসিনােফিল বৃদ্ধি পাওয়া , ফুসফুসের রােগে দীর্ঘকাল ভােগা , অ্যালার্জী রােগে ভােগা , হৃৎপিণ্ডের দুর্বলতা , দূষিত পরিবেশে বাস , ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস এবং বংশগত কারণে এই রােগ হয় ।
*হাঁপানি অল্প বয়সেই শুরু হয় । সাধারণত শৈশবে এবং যৌবনে এর প্রাদুর্ভাব হয় । ধুলােবালি , ধোঁয়া , ঠাণ্ডা , সর্দিকাশি ইত্যাদিতে হাঁপানি বাড়ে ।
**ব্রঙ্কাইটিশ রােগে ভুগতে ভুগতে হাঁপানি হলে তাকে ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বলে ।
রােগ লক্ষণ :
হঠাৎ শেষরাতে ঘুম ভেঙে যায় । শ্বাস নিতে কষ্ট হয় । রােগী উঠে বসে । বুকে বালিশ চাপা দিয়ে সামনে ঝুঁকে পড়ে । প্রচণ্ডভাবে হাঁপাতে থাকে । শ্বাস ফেলতে কষ্ট হয় । এরকম ১-২ ঘণ্টা থাকে তারপর ধীরে ধীরে রােগী সুস্থ হয় । আবার কিছুদিন হয়তাে ভাল থাকে । আবার হঠাৎ হাঁপানি দেখা দেয় । রােগ যত পুরানাে হতে থাকে আক্রমণ তত ঘনঘন হতে থাকে ।
*শেষের দিকে হঠাৎ হাঁপানি শুরু হয় , কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে থাকে । রােগীর অবস্থা শােচনীয় হয়ে পড়ে । এই অবস্থাকে বলে Status Asthmaticus ।
**কারাে কারাে দিনে রাতে সব সময়েই হাঁপের টান থাকে , কখনাে বা বাড়ে , কখনাে একটু কম হয় , এটা ক্রনিক অ্যাজমা ।
রােগ নির্ণয় :
১। Pulmonary Function Test .
২। X – ray for Chest P.A. এবং Lateral View ,
৩। রক্তের T.C.D.C পরীক্ষা ।
চিকিৎসা : অ্যাকিউট অবস্থায় –
১। Inj . Deriphyllin ( ইঞ্জেকশন ডেরিফাইলিন ) ২ মিলি করে দিনে ৩ বার পেশিতে বা শিরাপথে । অথবা Inj . Etyofil ( ইঞ্জেকশন ইটাওফিল ) ২ মিলি করে দিনে ৩ বার পেশিতে বা শিরাপথে । অথবা Inj . T.R. Phyllin ( ইঞ্জেকশন টি.আর.ফাইলিন ) ২ মিলি করে দিনে ৩ বার পেশিতে বাশিরাপথে ।
২। Inj.Decdan ( ইঞ্জেকশন ডেকড্যান ) ২ মিলি শিরাপথে বা পেশিতে । অথবা Inj . Betnesol ( ইঞ্জেকশন বেটনিশল ) ১-২ মিলি শিরাপথে বা পেশিতে ।
৩ । Asthalin Inhaler ( অ্যাসথালিন ইনহেলার ) ১-২ টি শ্বাসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । অথবা BricanyI Misthaler ( ব্রিকানিল মিস্টহেলার ) ১-২ টি শ্বাসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । অথবা Cromal – 5 Inhaler ( ক্রোমাল – ৫ ইনহেলার ) ১-২ টি স্বাসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । অথবা Glaxo Salbutamol Inhaler ( গ্ল্যাক্সো স্যালবুটামলইনহেলার ) ১-২ টি শ্বাসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । অথবা Fintal Inhaler ( ফিনটাল ইনহেলার ) ১-২ টি স্বাসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার ।
৪ | আক্রমণ প্রশমিত হলে দিতে হবে মুখে খাবার ঔষধ –
Cap Ventorlin ( ক্যাপ ভেনটোরলিন ) ১ টি করে দিনে ২-৩ বার । অথবা Tab Theo – Asthalin ( ট্যাব থিও – অ্যাসথালিন ) ১ টি করে দিনে ৩-৪ বার । অথবা Tab Deriphyllin ( ট্যাব ডেরিফাইলিন ) ১ টি করে দিনে ৩ বার অথবা Tab Broncordil – sp ( ট্যাব ব্রনকরডিল -এস.ডি. ) ১ টি করে দিনে ৩ বার ।
৫। অ্যালার্জিজনিত কারণে হাঁপানি হলে দিতে হবে –
Tab Ketasma ( ট্যাব কেটমা ) ১ টি ট্যাব দিনে ২-৩ বার । অথবা Tab Stafen ( ট্যাব স্টাফেন ) ১ টি করে দিনে ২-৩ বার । অথবা Tritofen ( ট্যাব ট্রাইটোফেন ) ১ টি করে দিনে ২-৩বার । অথবা Tab Zerosma ( ট্যাব জেরােমা ) ১ টি করে দিনে ২ বার ।
৬। কাশির জন্য দেওয়া যেতে পারে –
**Viscodine – S – Syrup ( ভিসকোডাইন – এস – সিরাপ ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার । অথবা AscorilExp ( অ্যাসকোরিল এক্সপেক্টোরান্ট ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার অথবা Deletus – A Liquid ( ডেলেটাস – এ লিকুইড ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার । অথবা Ventakof Syrup ( ভেন্টাক – সিরাপ ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার । অথবা Tuspel Plus ( টাসপেল প্লাস সিরাপ ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার । অথবা Bro – Zedex Syrup ( ব্লো – জিডেক্স – সিরাপ ) ২ চামচ করে দিনে ৩ বার ।
৭। রােগনিক হয়ে গেলে তখন দিতে হবে –
Tab Deriphyllin – Re tard ( ট্যাব ভেরিফাইলিন – রিটার্ড ) ১ টি করে দিনে ২-৩ বার । অথবা Tab Eto Salhetol ( ট্যাব ঈটো – স্যালবেটল ) ১-২ টি করে দিনে ৩-৪ বার । এবং Beclate Inhaler ( বেকলেটইনহেলার ) ২ টিকরেসগ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । অথবা Becoride Inhaler ( বিরােইড ইনহেলার ) ২ টি করে শ্বাস গ্রহণ দিনে ৩-৪ বার । প্রয়ােজনে Tab Bertesol ( ট্যাব বেটনিশল ) ২ টি করে দিনে ৩ বার ৫ দিন । তারপর , ২ টি করে দিনে ২ বার পাঁচ দিন । তারপর ১ টি করে দিনে ৩ বার ৫ দিন । তারপর , ১ টি করে দিনে ২ বার ৫ দিন । তারপর , ১ টি করে দিনে ১ বার ৫ দিন ।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা :
হাঁপানি খুব বেশি হলে রােগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করে অক্সিজেন দেবার ব্যবস্থা করতে হবে Inj . Dextrose I.V … তে দিয়ে তার মাধ্যমে ইঞ্জেকশন পুশ করতে হবে ।
*সাধারণ রােগীদের খালি হাতে কিছু হালকা ব্যায়াম করা খুবই উপকারী । বিছানায় শুয়ে থাকা ভালনয় । সকালে এবং বিকালে মুক্ত বাতাসে ভ্রমণ উপকারী । আক্রমণ অবস্থায় গরম পানীয় খাওয়া ভাল । তাছাড়া এই রােগীদের অঙ্গুরিমাল জাতীয় খাদ্য ছাড়া সকল প্রকার খাবার খাওয়া চলবে । মাংস কম খাওয়াই ভাল ।
**রক্ত পরীক্ষায় যদি দেখা যায় ইওসিনােফিল খুব বেড়ে গেছে তার চিকিৎসা অবশ্যই করতে হবে ।